জ্যামিতিক সকল সংজ্ঞা
❖ বিন্দুঃ যার দৈর্ঘ্য, প্রস্থ, উচ্চতা বা বেধ নেই, শুধুমাত্র অবস্থান আছে তাকে বিন্দু বলে।
❖ রেখাঃ যার দৈর্ঘ্য আছে কিন্তু প্রস্থ ও উচ্চতা নেই, তাকে রেখা বলে।
❖ সরল রেখাঃ যে রেখার শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত কোন দিক পরিবর্তন করে না অর্থাৎ সর্বাবস্থায় একই রকম থাকে তাকে সরল রেখা বলে।
❖ বক্র রেখাঃ যে রেখা শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত যে কোন অবস্থানের দিক পরিবর্তন করে তাকে বক্র রেখা বলে।
❖ সমান্তরাল রেখাঃ একই সমতলে অবস্থিত দুটি সরল রেখা একে অপরকে ছেদ না করলে, তাদেরকে সমান্তরাল সরল রেখা বলে।
❖ কোণঃ দুইটি রেখার প্রান্ত বিন্দু একটি নির্দিষ্ট স্থানে একসাথে মিলিত হলে ঐ মিলিত স্থানকে কোণ বলে।
❖ সূক্ষ্মকোণঃ এক সমকোণ (90) অপেক্ষা ছোট কোণকে সূক্ষকোণ বলে।
❖ সমকোণঃ একটি সরল রেখার উপর অন্য একটি লম্ব টানলে এবং লম্বের দু’ পাশে অবস্থিত ভূমি সংলগ্ন কোণ দুটি সমান হলে, প্রতিটি কোণকে সমকোণ বলে। এক সমকোণ সমান ৯০.
❖ স্থূলকোণঃ এক সমকোণ অপেক্ষা বড় বিন্তু দুই সমকোণ অপেক্ষা ছোট কোণকে সথূলকোণ বলে।
❖ সরলকোণঃ দু’টি সরল রেখাপরস্পর সম্পর্ণ বিপরীত দিকে গমন করলে রেখাটির দু’ পাশে যে কোণ উৎপন্ন হয় তাকে সরলকোণ বলে। সরলকোণ দুই সমকোণের সমান বা 180.
❖ প্রবৃদ্ধকোণঃ দুই সমকোণ অপেক্ষা বড় কিন্তু চার সমকোণ অপেক্ষা ছোট কোণকে প্রবদ্ধ কোণ বলে।
❖ লম্বঃ দুটি রেখা পরস্পর ছেদ করলে উৎপন্ন ৪ টি কোণ সমান অর্থাৎ ৯০ করে হলে তাদেরকে পরস্পরের উপর লম্ব বলে।
❖ সন্নিহিতকোণঃ যদি দু’টি কোণের একটি সাধারণ বাহু থাকে তবে একটি কোণের অপর কোণের সন্নিহিত কোণ বলে।
❖ বিপ্রতীপকোণঃ দু’টি সরল রেখা পরস্পর ছেদ করলে যে চারটি কোণ উৎপন্ন হয় এদের যেকোণ একটিকেতার বিপরীত কোণের বিপ্রতীপ কোণ বলে।
❖ সম্পূরককোণঃ দু’টি কোণের সমষ্টি 180 বা দুইসমকোণ হলে একটিকে অপরটির সম্পূরক কোণ বলে।
❖ পূরককোণঃ দু’টি কোণের সমষ্টি এক সমকোণ বা 90 হলেএকটিকেঅপরটির পূরক কোণ বলে।
❖ একান্তর কোণঃ দু’টি সমান্তরাল রেখাকে অপর একটি রেখা তির্যকভাবে ছেদ করলে ছেদক রেখার বিপরীত পাশে সমান্তরাল রেখা যে কোণ উৎপন্ন করে তাকে একান্তর কোণ বলে। একান্তর কোণগুলো পরস্পর সমান হয় ৷
❖ অনুরূপকোণঃ দু’টি সমান্তরাল সরল রেখাকে অপর একটি সরল রেখা ছেদ করলে ছেদকের একই পাশে যে কোণ উৎপন্ন হয় তকে অনুরূপ কোণ বলে। অনুরূপ কোণগুলো পরস্পর সমান হয়।
❖ প্রবৃদ্ধকোণঃ দুই সমকোণ থেকে বড় কিন্তু চার সমকোণ থেকে ছোট কোণকে প্রবৃদ্ধকোণ বলে ।
❖ ত্রিভূজঃ তিনটি সরলরেখা দ্বারা সীমাবদ্ধ ক্ষেত্রকে ত্রিভূজ বলে।
❖ সুক্ষ্মকোণীত্রিভূজঃ যে ত্রিভূজের তিনটি কোণই এক সমকোণ(90) এর ছোট তাকে সূক্ষ্মকোণী ত্রিভূজ বলে।
❖ সুক্ষ্মকোণীত্রিভূজঃ যে ত্রিভূজের একটি কোণ সথূলকোণ বা এক সমকোণ অপেক্ষা বড় তাকে সথূলকোণী ত্রিভূজ বলে।
❖ সমকোণী ত্রিভূজঃ যে ত্রিভূজের একটি কোণ সমকোণ তাকে সমকোণী ত্রিভূজ বলে। কোন ত্রিভূজে একটির অধিক সমকোণ থাকতে পারে না। সমকোণী ত্রিভূজের সমকোণের বিপরীত বাহুকে অতিভূজ এবং সমকোণ সংলগ্ন বাহুদ্বয়ের একটিকে ভূমি এবং অপরটিকে লম্ব বলা হয়।
❖ সমদ্বিবাহু ত্রিভূজঃ যে ত্রিভূজের দুটি বাহুর দৈর্ঘ্য সমান তাকে সমদ্বিবাহু ত্রিভূজ বলে।
❖ সমবাহু ত্রিভূজঃ যে ত্রিভূজের তিনটি বাহুই সমান তাকে সমবাহু ত্রিভূজ বলে।
❖ চতুর্ভুজঃ চারটি রেখাংশ দ্বারা আবদ্ধ ক্ষেত্র বা চিত্রকে চতুর্ভুজ বলে।
❖ চতুর্ভুজের বৈশিষ্ট্যঃ চারটি বাহু, চারটি কোন, অন্তর্বর্তী চারটি কোনের সমষ্টি ৩৬০°।
❖ বর্গঃ আয়তক্ষেত্রের দুটি সন্নিহিত বাহু সমান হলে তাকে বর্গ বলে ।
❖ আয়তক্ষেত্রঃ যে চতুর্ভুজের বিপরীত বাহুগুলো সমান ও সমান্তরাল এবং প্রতিটি কোণ সমকোণ, তাকে আয়তক্ষেত্র বলে।
❖ বর্গক্ষেত্রঃ বর্গক্ষেত্র বলতে ৪টি সমান বাহু বা ভূজ বিশিষ্ট বহুভূজ, তথা চতুর্ভূজকে বোঝায়, যার প্রত্যেকটি অন্তঃস্থ কোণ এক সমকোণ বা নব্বই ডিগ্রীর সমান।
❖ সামান্তরিকঃ যে চতুর্ভুজের বিপরীত বাহুগুলো সমান ও সমান্তরাল এবং বিপরীত কোণগুলো সমান (কিন্তু কোণ গুলো সমকোন নয়), তাকে সামান্তরিক বলে।
❖ রম্বসঃ রম্বস এক ধরনের সামান্তরিক যার সবগুলি বাহু সমান কিন্তু কোণ গুলো সমকোন নয়।
❖ ট্রাপিজিয়ামঃ যে চতুর্ভুজ এর দুইটি বাহু সমান্তরাল কিন্তু অসমান।
❖ বহুভুজঃ
(কারনঃ সরলরেখা দ্বারা সীমাবদ্ধ) বহুভুজ নয়
(কারনঃ বক্র রেখা দ্বারা সীমাবদ্ধ) বহুভুজ নয়
(কারনঃ সীমাবদ্ধ নয়)
যদি বহুভুজের সবগুলি বাহু ও কোণ সমান হয়, তবে সেটিকে সুষম বহুভুজ বলে।
❖ বৃত্তঃ একটি নির্দিষ্ট বিন্দুকে কেন্দ্র করে ও কেন্দ্র থেকে সমান দুরত্ব বজায় রেখে কোন বিন্দু যে বক্র রেখা তৈরি করে তাকে বৃত্ত বলে।
❖ কেন্দ্রঃ বৃত্ত বা পরিধির মধ্য বিন্দুকে কেন্দ্র বলে।
❖ ব্যাসঃ বৃত্তের এক প্রান্ত থেকে অপর প্রান্ত পর্যন্ত কেন্দ্রগামী দুরত্বকে ব্যাস বলে।
❖ ব্যাসার্ধঃ ব্যাসের অধেক অর্থাৎ বৃত্তের কোন প্রান্ত থেকে কেন্দ্র পর্যন্ত অংশকে ব্যাসার্ধ বলে।
❖ জ্যাঃ ব্যাস ব্যতীত বৃত্তের পরিধির যে কোন দুটি বিন্দুর সংযোগকারী রেখাকে জ্যা বলে।
❖ পরিধিঃ যে বক্র রেখা দ্বারা বৃত্তটি সীমাবদ্ধ থাকে তাকে পরিধি বলে।
❖ লম্বকেন্দ্রঃ ত্রিভুজের তিনটি শীর্ষ থেকে বিপরীত বাহুগুলির উপর তিনটি লম্ব সমবিন্দুগামী, এবং বিন্দুটির নাম লম্বকেন্দ্র।
❖ পরিবৃত্তঃ তিনটি শীর্ষবিন্দু যোগ করে যেমন একটিমাত্র ত্রিভুজ হয় তেমনি তিনটি বিন্দু (শীর্ষ)গামী বৃত্তও একটিই, এর নাম পরিবৃত্ত ।
❖ পরিকেন্দ্রঃ পরিবৃত্তের কেন্দ্র (যে বিন্দু ত্রিভুজের শীর্ষত্রয় থেকে সমদূরত্বে স্থিত)।
❖ কর্ণঃ চতুর্ভুজের বিপরীত শীর্ষ বিন্দুগুলোর দিয়ে তৈরি রেখাংশকে কর্ণ বলে। চতুর্ভুজের কর্ণদ্বয়ের সমষ্টি তার পরিসীমার চেয়ে কম।
❖ গোলকঃ দুইটি পরস্পর বিপরীত রশ্মি তাদের সাধারণ প্রান্ত বিন্দুতে যে কোণ উৎপন্ন করে, তাকে সরল কোণ বলে।
❖ ছেদকঃ যে সরলরেখা দুই বা ততোধিক সরলরেখাকে ছেদ করে, তাকে ছেদক বলে।
❖ অন্তঃকেন্দ্রঃ ত্রিভুজের কোণত্রয়ের সমদ্বিখন্ডকগুলো সমবিন্দু । এই বিন্দু ত্রিভুজের অন্তঃকেন্দ্র।
❖ পরিকেন্দ্রঃ ত্রিভুজের বাহুত্রয়ের লম্বদ্বিখন্ডকত্রয় সমবিন্দু। এই বিন্দু ত্রিভুজের পরিকেন্দ্র
❖ ভরকেন্দ্রঃ ত্রিভুজের কোণ একটি শীর্ষবিন্দু এবং তার বিপরীত বাহুর মধ্যবিন্দুর সংযোজক সরলরেখাকে মধ্যমা বলে। ত্রিভুজের মধ্যমাত্রয় সমবিন্দু । এই বিন্দু ত্রিভুজের ভরকেন্দ্র।
❖ লম্ববিন্দুঃ ত্রিভুজের শীর্ষত্রয় হতে বিপরীত বাহুর উপর অঙ্কিত লম্বত্রয় সমবিন্দু। এই বিন্দু ত্রিভুজের লম্ববিন্দু।
❖ সর্বসমঃ দুইটি ক্ষেত্র সর্বসম হবে যদি একটি ক্ষেত্র অন্যটির সাথে সর্বতোভাবে মিলে যায়। সর্বসম বলতে আকার ও আকৃতি সমান বুঝায় ।
❖ স্পর্শকঃ একটি বৃত্ত ও একটি সরলরেখার যদি একটি ও কেবল ছেদবিন্দু থাকে তবে রেখাটিকে বৃত্তটির একটি স্পর্শক বলা হয়।
❖ সাধারণ স্পর্শকঃ একটি সরলরেখার যদি দুইটি বৃত্তের স্পর্শক হয়, তবে বৃত্ত দুইটির একটি সাধারণ স্পর্শক বলা হয়।
❖ আয়তিক ঘনবস্তুঃ তিন জোড়া সমান্তরাল আয়তাকার সমতল বা পৃষ্ট দ্বারা আবদ্ধ ঘনবস্তুকে আয়তিক ঘনবস্তু বলে। ঘনকঃ আয়তাকার ঘনবস্তুর দৈর্ঘ্য, প্রস্থ ও উচ্চতা সমান হলে, তাকে ঘনক বলে ।
❖ কোণকঃ কোন সমকোণী ত্রিভুজে সমকোণ সংলগ্ন যে কোন একটি বাহুকে স্থির রেখে ঐ বাহুর চতুর্দিকে ত্রিভুজটিকে ঘুরালে যে ঘনবস্তু উৎপন্ন হয় তাকে সমবৃত্তভুমিক কোণক বলে ।
❖ সিলিন্ডার বা বেলুনঃএকটি আয়তক্ষেত্রের যে কোন একটি বাহুকে স্থির রেখে ঐ বাহুর চতুর্দিকে আয়তক্ষেত্রটিকে ঘুরালে যে ঘনবস্তু উৎপন্ন হয় তাকে সমবৃত্তভুমিক বেলুন বলে ।